ঢাকা, ২৮ আগস্ট ২০১৭ঃ একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার বিষয়ে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ৬ বিষয়ে ৩২ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। আজ ২৮ আগস্ট ২০১৭ সোমবার বিকাল ৩.০০টা থেকে পৌনে ২ ঘন্টা ধরে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সাথে অনুষ্ঠিত সংলাপে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ, নির্বাচনের পরিবেশ, সুষ্ঠু ভোট, নির্বাচনী ব্যয় ও জাতীয় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার বিষয়ে দলমতের উর্ধ্বে উঠে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়সহ নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহ নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখা, সামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেসী ক্ষমতা প্রদান করে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা থেকে রিটানিং অফিসার ও সহকারী রিটানিং অফিসার নিয়োগ, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম বা ডিভিএম ব্যবহার না কর, ২০০৮ সালের পূর্বে সংসদীয় আসনসংখ্যা যেভাবে বিন্যস্ত ছিল সেভাবে পুন:নির্ধারণ করা, নির্বাচনকে অর্থ ও পেশী শক্তির প্রভাব মুক্ত রাখা, সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জমা নেয়া, বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পূর্বে সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দেয়া, অনলাইনেও মনোনয়ন পত্র জমাদানের সুযোগ রাখা, সিল মারার গোপন স্থান ব্যতীত ভোট কেন্দ্রের সকল জায়গা সিসিটিভির আওতায় আনা, প্রবাসী ভোটারদের ভোট গ্রহনের পদক্ষেপ নেয়া, ভোট গ্রহনে নিয়োজিতদে আগাম ভোট গ্রহনের ব্যবস্থা করা, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা, সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় যাতে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে না পারে সে পদক্ষেপ নেয়া, সরকারী দল ও বিরোধী দলসমূহকে অবিলম্বে জাতীয় সংলাপে বসার ব্যবস্থা করাসহ মোট বত্রিশ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, যুগ্মমহাসচিব এডভোকেট মো: জাহাঙ্গীর হোসাইন, শেখ গোলাম আসগর, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বায়তুলমাল ও আইনবিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ মিজানুর রহমান, অফিস ও প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ আবদুল জলিল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হাফেজ মাওলানা জিন্নত আলী।

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী(অবঃ) ও নির্বাচন কমশিনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর একটি বিতর্কিত ও অগ্রহনযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনবিচ্ছিন্ন সরকার দেশের ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকায় দেশে রাজনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দেশের সংসদ আজ ‘অকার্যকর’। মানুষের ভোটের অধিকার ভূলুন্ঠিত। ৫ জানুয়ারীর ভোট ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে খোদ নির্বাচন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে এক নেতিবাচক ধারণা। চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দেশে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও জবাবদিহীমূলক সরকার ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরী। একইসাথে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার তথা নির্বাচনী ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্যে সকল দলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন অত্যন্ত গুরুত্বর্র্র্র্পূণ। একই সাথে নির্বাচনকালীন সরকারের সদিচ্ছা ও নিরপেক্ষ ভূমিকা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ও অন্যান্য কমিশনারগণ খেলাফত মজলিসের অধিকাংশ প্রস্তাবকে যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেণ এবং সুচিন্তিত প্রস্তাবনার জন্যে খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।

 

২৮ আগস্ট ২০১৭ বিকাল ৩টা, নির্বাচন ভবন, আগারগাঁও, ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের সাথে অনুষ্ঠিত সংলাপে খেলাফত মজলিসের লিখিত প্রস্তাবনাঃ

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে খেলাফত মজলিসের প্রস্তাবনা
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, যুগোপযোগী ও সহজীকরণ বিষয়ে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে খেলাফত মজলিসকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আমন্ত্রন জানানোর জন্যে শুরুতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্যান্য নির্বাচন কমিশনা ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর একটি বিতর্কিত ও অগ্রহনযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনবিচ্ছিন্ন সরকার দেশের ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকায় দেশে রাজনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। দেশের সংসদ আজ ‘অকার্যকর’। মানুষের ভোটের অধিকার ভূলুন্ঠিত। ৫ জানুয়ারীর ভোট ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে খোদ নির্বাচন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে এক নেতিবাচক ধারণা। চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে দেশে একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও জবাবদিহীমূলক সরকার ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা অত্যন্ত জরুরী। একইসাথে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার তথা নির্বাচনী ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্যে  সকল দলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন অত্যন্ত  গুরুত্বর্র্র্র্পূণ। একই সাথে নির্বাচনকালীন সরকারের সদিচ্ছা ও নিরপেক্ষ ভূমিকা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।  একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার বিষয়ে খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত প্রস্তাবাবলী পেশ করছি:

১. নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীকরণ ঃ
১.১. নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ ও দলমতের উর্ধ্বে উঠে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। সকল দল ও প্রার্থীর সমানাধিকার নিশ্চিত করা। সকল ভোটার যাতে নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দ মত প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে নির্বাচন কমিশনকে তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রদত্ত ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
১.২. নির্বাচন কমিশনকে সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কাজের ক্ষেত্রে সরকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারবে না এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা থাকতে হবে। তদুপরি আর্থিকভাবেও নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন হতে হবে।
১.৩. নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনা ও নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় কার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়সহ নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহ বিশেষত: মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনে যারা নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তাদেরকে নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখতে হবে। নির্বাচন কমিশন চাইলে তাদের যে কাউকে বদলী করতে পারবেন, এমন বিধান করতে হবে।
১.৪. নির্বাচনকালীন সময়ে অন্যান্য আইন-শৃক্সক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের সময়ে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসী ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
১.৫. নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব জনবল বৃদ্ধি করা। প্রত্যেকটি নির্বাচনী আসনে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তা থেকে দক্ষ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের রিটানিং অফিসার ও সহকারী রিটানিং অফিসার নিয়োগ করার ব্যবস্থা করা।
১.৬. সকল রাজনৈতিক দল ঐকমত্য না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম বা ডিভিএম ব্যবহার করা যাবে না। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম বা ডিভিএম ব্যবহারের চিন্তা না করে নির্বাচনী কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ব্যাপক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা।
২. সংসদীয় আসনের সীমানা ও আরপিও:
২.১. ২০০৮ সালের পূর্বে সংসদীয় আসনসংখ্যা যেভাবে বিন্যস্ত ছিল সেভাবে পুন:নির্ধারণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ভৌগলিক ও প্রশাসনিক অখন্ডতা অক্ষুন্ন রাখার প্রতি গুরুত্ব দেয়া।
২.২. অবাধ ও মুক্ত রাজনৈতিক চর্চার জন্যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের শর্তাবলী শিথিল করা।
৩. নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষা ঃ
৩.১. নির্বাচনকে অর্থ ও পেশী শক্তির প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হবে। সবার জন্যে সমান সুযোগ তথা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কালো টাকার ব্যবহার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা। এর জন্য প্রয়োজনীয় নির্বাচনী আইন ও বিধি প্রণয়ন করা।
৩.২ ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ও যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহিত সেনাবাহিনীকে সংশ্লিষ্ট করতে হবে।
৩.৩. সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জমা নেয়ার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
৩.৪. বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা ও নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পূর্বে সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দিতে হবে।
৩.৪. নির্বিঘেœ যাতে সবাই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারেন তা নিশ্চিত করা। একই সাথে অনলাইনেও মনোনয়ন পত্র জমাদানের সুযোগ রাখা।
৩.৫. প্রচার- প্রচারণায় সবার জন্যে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। কোন পক্ষ থেকে কাউকেও ভোটের প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা দান বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সাথে মিথ্যা অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা।
৪. সুষ্ঠু ভোটঃ
৪.১. ভোট দানে পেশীশক্তির প্রয়োগ ও সরকারী সুযোগ সুবিধা কাজে লাগানো সর্ম্পূণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা।
৪.২. সবাই যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলে তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
৪.৩. ভোটের আগের দিন থেকেই ভোট কেন্দ্র, ভোটের সরঞ্জাম ও ভোট গ্রহনকারী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি কেন্দ্রে সেনাবহিনীসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা।
৪.৪. ভোট কেন্দ্র ও এর আশেপাশে দলীয় ক্যাডারদের মহড়া/ যৌথ মহড়া বন্ধ করার ব্যবস্থা করা।
৪.৫. নিরপেক্ষভাবে ভোটের খবর প্রচারে/ সরাসরি সম্প্রচারে মিডিয়ার উপর কোনরূপ বাঁধা সৃষ্টি করা যাবে না।
৪.৬. দেশী বিদেশী নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষনে কোন রূপ বাঁধা সৃষ্টি করা যাবে না।
৪.৭. প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের প্রবেশ পথের বাহিরে ও ভিতরে এবং সিল মারার গোপন স্থান ব্যতীত ভোট কেন্দ্রের সকল জায়গা সিসিটিভির আওতায় আনার ব্যবস্থা করা।
৪.৮. কোন পক্ষ থেকে ভোট গ্রহনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদান কোনভাবেই বরদাস্ত না করা।
৪.৯. ভোট জালিয়াতি, জাল ভোট প্রদানের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা।
৪.১০. ভয়ভীতি প্রদান করে বা জোরপূর্বক কোন প্রার্থীর কোন এজেন্টকে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা।
৪.১১. ভোট গ্রহন সমাপ্ত হলে উপস্থিত সকল প্রার্থীর প্রতিনিধিদের সামনে ভোট গণণা করে প্রতি কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষনা নিশ্চিত করা। ঘোষিত ফলাফলের কপি উপস্থিত সকল প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টকে সরবরাহ করা।
৪.১২. প্রবাসী ভোটারদের ভোট গ্রহনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা।
৪.১৩. ভোট গ্রহনে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আগাম ভোট গ্রহনের ব্যবস্থা করা।
৫. নির্বাচনী ব্যয়ঃ
৫.১. নির্বাচনকে যেকোন মূল্যে কালো টাকা ও পেশী শক্তির প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে।
৫.২. ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোন গুরুতর অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রার্থীতা বাতিল এমনকি নির্বাচিত হলেও তার পদ বাতিল ঘোষনা করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
৬. জাতীয় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ঃ
একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের জন্যে নির্বাচন কমিশনের যথাযথ ভূমিকার সাথে সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী সকল দলকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে। সর্বোপরি নির্বাচনকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যে হতে হবে আন্তরিক। যেহেতু অতীত অভিজ্ঞতা বলে, দলীয় সরকারের অধীনের সুষ্ঠু নির্বাচন একেবারেই দুরূহ তাই-
৬.১. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ সরকার নির্বাচন কমিশনকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে। নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার শুধু সরকারের দৈনন্দিন(জড়ঁঃরহব) কার্য সম্পাদন করবে।
৬.২. সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারবেন না। তাই বিদায়ী সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।
৬.৩. নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের জন্যে সরকারী দল ও বিরোধী দলসমূহকে অবিলম্বে জাতীয় সংলাপ বসতে হবে।
৬.৪. সব দলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্যে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে প্রয়োজনে সংবিধানের সংশোধনী আনতে হবে।

খেলাফত মজলিসের পক্ষে,

(ড. আহমদ আবদুল কাদের)

মহাসচিব

তারিখঃ ২৮ আগস্ট ২০১৭ ঈসায়ি