ঢাকা, ১৯ জুলাই ২০১৯ঃ খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেছেন, দেশে একটি দু:সহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাজনৈতিক সংকট এখন রাজনৈতিক শূন্যতায় পরিনত হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি চরমে পৌঁছেছে। দেশে গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, নারী-শিশু নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মানুষের জান মাল ইজ্জতের ন্যূনতম নিরাপত্তা নেই। প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা, শিশু ধর্ষণ, গণধর্ষণ, পরীক্ষার হলে আগুন দিয়ে হত্যা, বিচারকের এজলাসে ছুরি মেরে হত্যার মত ঘটনা ঘটছে। ঘরে-বাইরে কোথায়ও মানুষ নিরাপদ নয়। এহেন দু:শাসন ও দুর্বিষহ অবস্থা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে। খেলাফত মজলিসে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সেক্যুলার শিক্ষা নীতির কারণে দেশে অনৈতিকতার সয়লাব চলছে। এর মধ্যে ডারউইনের বিতর্কিত ‘বিবর্তনবাদ’ বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেনীর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভূক্তি করে নতুন প্রজন্মকে নাস্তিক্যবাদের দিকে ধাবিত করা হচ্ছে। পাঠ্যবইয়ে ডারউইনের ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সংশয়বাদী ও নাস্তিক্যবাদী হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে নাস্তিক্যবাদের শিক্ষা কোন ভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। চট্টগ্রামের ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসকনের উদ্যোগে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রসাদ খাইয়ে হিন্দু ধর্মীয় মন্ত্র পাঠ করানোর ঘটনা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে মারাত্মকভাবে আঘাত হেনেছে। সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দরকার, অবিলম্বে পাঠ্যসূচী থেকে ডারউইনের বিতর্কিত নাস্তিক্যবাদী ‘বিবর্তনবাদ’ উঠিয়ে দিতে হবে। ইসকনের উদ্যোগে স্কুলের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রসাদ খাইয়ে হিন্দু ধর্মীয় মন্ত্র পাঠ করানোর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

আজ ১৯ জুলাই শুক্রবার সকাল ৯টায় রাজধানীর নয়াপল্টস্থ সীগাল রেস্টুরেন্টে আমীরে মজলিস মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, যুগ্মমহাসচিব- মাওলানা মুহাম্মদ শফিক উদ্দিন, এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, শেখ গোলাম আসগর, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ডাঃ আবদুল্লাহ খান, মাওলানা জিয়াউল হক শামীম, মাওলানা ফরিদ আহমদ সিদ্দিকী, অধ্যাপক আলী রেজা, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক- ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মাওলানা এ কে এম আইউব আলী, কে এম নজরুল হক, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শফিউল অলম, মাওলানা তোফাজ্জ¦ল হোসাইন মিয়াজী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল হালিম, এডভোকেট মিজানুর রহমান, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, অধ্যাপক কে এম আলম, মাওলানা নুরুজ্জামান খান, মাওলানা শামসুজ্জামান চেীধুরী, ডা: শরীফ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক, মাষ্টার সাইফ উদ্দিন, আহমদ আসলাম, মাওলানা নুরুল আলম আল মামুন, বুরহান উদ্দিন সিদ্দিকী, অধ্যাপক আবু সালমান, মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুল ইসলাম, এবিএম সিরাজুল মামুন, মাস্টার আবদুল মজিদ, মাওলানা সাঈদ আহমদ, মাওলানা সৈয়দ মুশাহিদ আলী, মাওলানা আইউব আলী, হাফেজ মাওলানা জিন্নত আলী, অধ্যাপক মাওলানা খুরশীদ ্অলম, মাওলানা আজিজুল হক, প্রভাষক মোঃ আবদুল করিম, অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব আলম, মাওলানা ওযায়ের আমীন, হাজী নূর হোসেন, মাওলানা আবদুল হাই প্রমুখ ।

অধিবেশনে দেশের বন্যাদুর্গত মানুষের সাহায্যার্থে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সমাজক্যাণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবু সালেহীনকে আহ্বায়ক ও বায়তুলমালসম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমানকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়।
অধিবেশনে একটি শোক প্রস্তাবসহ ১. রাজনৈতিক সংকট ও স্থবিরতা প্রসঙ্গ ২. হত্যা, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন প্রসঙ্গ ৩. বন্যা পরিস্থিতি ও বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ প্রসঙ্গ ৪. গরীব মারার বাজেট, জ্বালানী গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি প্রসঙ্গ ৫. শিক্ষাঙ্গন পরিস্থিতি ও পাঠ্যসূচীতে ডারউইনের বিবর্তনবাদ প্রসঙ্গ ও ৬. ভারতসহ দেশে দেশে মুসলিম নির্যাতন প্রসঙ্গে ৭টি প্রস্তাব গৃহীত হয়।
অধিবেশনে সারাদেশের ৫৯টি জেলা শাখার সাংগঠনিক রিপোর্ট পর্যালোচনা হয়।