করোনার মহামারি থেকে মুক্তির জন্য একনিষ্ঠভাবে সিয়াম সাধনা ও ইবাদত বন্দেগীতে আত্মনিয়োগ করতে হবে: খেলাফত মজলিস
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২০: পবিত্র মাহে রমজান ১৪৪১ হিজরী উপলক্ষে দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। গতকাল ২৪ এপ্রিল প্রদত্ত এক যৌথ শুভেচ্ছা বাণীতে নেতৃদ্বয় বলেন, এ বছর বিশ^ব্যাপী করোনাভাইরাসের মহাদুর্যোগের মধ্যে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মাহে রমজান শুরু হচ্ছে। চারিদিকে মৃত্যুর মিছিল। ঘরবন্দী বনী আদম। এ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজানে পরিপূর্ণ হকসহকারে সাওম পালনের মাধ্যমে আমাদের আত্মিক পরিশুদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি সামাজিক সহমর্মিতা ও আত্মত্যাগের শিক্ষায় সমৃদ্ধ হতে হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট লকডাউনের ফলে স্বল্প আয়ের মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সামার্থবানদের এসব অভাবগ্রস্থ ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়াতে হবে। অভাবগ্রস্থ প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনরা যাতে ঠিকমত সাহরি-ইফতার করতে পারেন সেদিকে যথাযথভাবে খেয়াল রাখতে হবে। একইসাথে করোনাভাইরাস রোধে সবাইকে নিয়মিত সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোঁয়া, শারীরীক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্য সতর্কতা যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
আসন্ন মাহে রমজানে একনিষ্ঠভাবে সিয়াম সাধনা, সালাত, সাহরি, ইফতার, তারাবি, তিলাওয়াত, তাওবাহ-ইসতিগফারে আত্মনিয়োগ করতে হবে। কায়মনো বাক্যে আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে যাতে অবনতিশীল বৈশি^ক মহামারি করোনাভাইরাসের কবল থেকে দেশ, জাতি, মুসলিম উম্মাহ ও সমগ্রবিশ^বাসীকে আল্লাহ দ্রুত মুক্তি দান করেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাজিলের মাস মাহে রমজানে আমাদেরকে কুরআন চর্চায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। ব্যক্তি, সমাজ তথা রাষ্ট্রীয় জীবনকে আল-কুরআনের আলোকে সুসজ্জিত করার নতুন শপথে উজ্জীবীত হবে হবে। সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, মিথ্যা, পাপাচার, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হত্যা, ধর্ষণ, জুলুম, নির্যাতন থেকে সকলকে নিবৃত্ত থাকতে হবে। আজকে করোনা দুর্যোগে অভাবী মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী ত্রাণ তসরুফের ঘটনা ঘটছে। সরকারী ত্রাণ চুরির সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ত্রাণ চুুরি বন্ধে বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে অভাবগ্রস্থ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে হবে।
শুভেচ্ছা বানীতে নেতৃদ্বয় বলেন, মাহে রমজানের পবিত্রতা বিনষ্টকারী যেকোন তৎপরতা থেকে সকলকে দূরে থাকতে হবে। মাহে রমজান আসলেই এক শ্রেণির মুনাফাখোর, মজুদদার অসাধু ব্যক্তির কারসাজীতে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দেয়া হয়। এ বছর করোনাভাইরাসের মহাদুর্যোগের মধ্যেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে রোজাদারদের কষ্ট দেয়া এক মহা অন্যায়।
শুভেচ্ছা বাণীতে নেতৃদ্বয় করোনার মহাদুর্যোগের মধ্যেও বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের সকল মুসলমান পূর্ণ এক মাস রোজ পালনের মধ্য দিয়ে আত্মশুদ্ধি অর্জনে সক্ষম হবেন সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।