ঢাকা, ৩ জুন ২০২১: খেলাফত মজলিসের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক এক বিবৃতিতে আজ জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী উত্থাপিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ঋণনির্ভর ও গতানুগতিক আখ্যায়িত করে বলেছেন, বিশাল অংকের ঋণনির্ভর এ বাজেটে সাধারণ জনগণের জন্য ভালো কিছু নেই। ৬ লক্ষ ৩ হাজার ৬৮১কোটি টাকার প্রস্তাবিত এ বাজেটে ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার বিশাল অংকের ঘাটতি রয়েছে এ ঘাটতি মেটাতে দেশ-বিদেশ থেকে চড়া সূদে ঋণ নিতে হবে ২ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যা কোন ভাবেই অর্জন সম্ভব নয়। কারণ গত বছরও এ পরিমাণ রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো কিন্তু বিগত দশ মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে মাত্র ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।
ঋণনির্ভর এ বাজেটে শুধু সূদ প্রদানে ৬৯ হাজার কোটি টাকা (১১.৪%) ব্যয় হবে। বৈদেশীক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। আর দেশীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা সরকার ঋণ নিলে বেসরকারী ও ব্যক্তিগত খাতে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাঁধাগ্রস্থ হবে। অন্যদিকে জনগণের উপর জাতীয় ঋণের বোঝা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন সেক্টরে সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে জনগণের ট্যাক্স-ভ্যাটের অর্থ চলে যায় দুর্নীতিবাজদের হাতে। স্বাস্থ্য খাতে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরও বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল রাখা হয়েছিলো কিন্তু এ বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আইসিইউ সংকটসহ নানা সমস্যা প্রমান করেছে স্বাস্থ্য খাতে কোন অগ্রগতি হয়নি। ইতোমধ্যেই করোনার টিকা দান কর্মসূচী হোঁচট খেয়েছে। নতুন কয়েক কোটি বেকার ও দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের বিশেষ কোন উদ্যোগ নেই।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জনগণের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা বলবৎ রয়েছে। এ বাজেটে সাধারণ জনগণের কোন কল্যাণ হবে না। এ বাজেট জনগণের কাছে কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য হবে না।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর ১৫% আয়কর আরোপ করা হয়েছে, যা মূলত শিক্ষার্থীদেরকেই বহন করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাইভেট কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে অস্তিত্বের সংকটে সেখানে এই করারোপ অগ্রহনযোগ্য। বেসরকারী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর করারোপের প্রস্তাব বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া বাজেটে মোবাইল সিম ব্যবহারের করে সেবা গ্রহণের বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০% থেকে বাড়িয়ে ১৫% নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে মোবাইল ফোনে কথা বলা, বর্তা পাঠানো ও ডেটা ব্যবহারের খরচ বেড়ে যাবে। মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।