নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে – খেলাফত মজলিস
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৫: খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তার ১০ টির মত প্রস্তাবনা সরাসরি কুরআনের বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। কমিশনের প্রতিবেদনে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইন সংস্কার করে সকল ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে যেখানে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে নারী-পুরুষের কথিত সমান অধিকার থাকবে। স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করতে পারবে। যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করারও প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে।
আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, দেশের স্বার্থে, ইসলামের স্বার্থে এবং নারীদের স্বার্থে এই কমিশন বাতিল করতে হবে। কারণ, দেশের মানুষের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এই কমিশন দাঁড়িয়েছে। তারা পরিবার ও সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা করছে। পাশ্চাত্য জীবন দর্শনে প্রভাবিত কমিশনের এসব সদস্যরা বাংলাদেশের নারীদের সর্বসাধারণের আদৌ প্রতিনিধিত্ব করেন না। এরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাদের প্রস্তাবনাসমূহ মেনে নিলে তা হবে ইসলাম ও মুসলিম পরিচয়ের অস্তিত্বের উপর একটি সুপরিকল্পিত আঘাত। কমিশনের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই কমিশন বাতিল ঘোষণা দেওয়া পর্যন্ত সকলকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
সম্প্রতি ভারতে ওয়াক্ফ আইন সংস্কারের মাধ্যমে মুসলিমদের সম্পত্তি উচ্ছেদ ও বাজেয়াপ্ত করছে বিজেপি সরকার। কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর ফিলিস্তিনের গাজার মত গণহত্যা চালানোর জন্য বিজেপি নেতারা উস্কানি দিচ্ছে। আমরা ভারতীয় মুসলমানদের উপর উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদের সকল আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানাই। ভারত সরকারকে তার নিজ দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানাই। তিনি আজ ঢাকা মহানগরী খেলাফত মজলিস আয়োজিত ইসলাম বিদ্বেষী নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল ও ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
আজ ২৫ এপ্রিল বাদ জুমআ বায়তুল মোকাররম উত্তর চত্বরে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন ও মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল আজিজুল হকের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম-মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শায়খুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আলহাজ্ব নুর হোসেন, আমীর আলী হাওলাদার, মাওলানা ফারুক আহমদ ভূইয়া, এডভোকেট রফিকুল ইসলাম, শ্রমিক মজলিস কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবুল কালাম, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির আজাদ, মুন্সি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, উত্তর সহ-সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক হাসান, মুহাম্মদ মুজিবুল হক, ইসলামী যুব মজলিস দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মনসুরুল আহমেদ প্রমূখ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি সাইফুদ্দিন আহমদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড়ে এসে সমাপ্ত হয়।