ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জালিম সরকারের হাত থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করতে হবেঃ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর

 

ঢাকা, ২৩ মে ২০১৮ঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অলমগীর বলেছেন, ‘দেশ আজ মহাসংকটে। এতো বড় সংকটে আর পতিত হয়নি দেশ। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পদদলিত করে একদলীয় সরকার কায়েমের জন্য অন্যায় অত্যাচার দিয়ে সমস্ত বিরোধী শক্তিকে দমন করছে সরকার।’ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে খেলাফত মজলিস আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে নতুন অভিযান শুরু হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। ভালো কথা। আমরা অবশ্যই মাদক দমনে পদক্ষেপ নেয়া হোক তা চাই। তবে আগে ঘরের ব্যবসায়ীদের ধরুন। আপনাদের এমপি আব্দুর রহমান বদিই সবচেয়ে বড় মাদক ব্যবসায়ী। অথচ তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘অপরাধীদের বিচার হতে হবে। বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড চলতে পারে না। এর আগে জঙ্গি নির্মূল করতে গিয়ে আপনারা ভিন্ন মতকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার পথ বেছে নিয়েছেন। বিনা বিচারে নিরাপরাধীদের হত্যা করে জঙ্গি বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। কোনো তদন্তই করা হয়নি।’ মাদক নিয়ন্ত্রণ অভিযানের নামেও সেরকম নিরাপরাধ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমন চলবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

২১ মে ২০১৮ সোমবার বিকাল ৫:৩০ টায় রাজধানীর পুষ্পদাম রেস্টুরেন্টে এন্ড কনভেনশন হলে খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা সৈয়দ মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত ইফতার মাহফিলে মূল আলোচনা পেশ করেন সংগঠনের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন সংগঠনের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুগাম্মদ শফিক উদ্দিন। সংগঠনের যুগ্মমহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, শেখ গোলাম আসগর ও মুহাম্মদ মুনতাসির আলীর যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বীরপ্রতীক, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মিয়া গোলাম পরোয়ার, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এডভোকেট মাওলানা আবদুর রকিব, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি’র মহাসচিব ড. রেদওয়ান আহমদ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান, মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল ইসলাম ইসলামাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপি’র চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির অপরাংশের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ- বিএমএল’র মহাসচিব শেখ জুলফিক্কার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাপ ভাসানী সভাপতি এডভোকেট মোঃ আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, জমিয়তে উলাময়ে ইসলামের(একাংশের) মহাসচিব মাওলানা শেখ মজিবুর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগ- ডিএল’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহম্মদ, বিএনপির যুগ্মমহাসচিব এডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা মুসা বিন ইজহার।
উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, বাংলাদেশ মুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট এ কে এম বদরুদ্দোজা, দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, কবি আদুল হাই শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি বাসির জামাল, ইনসাফ২৪ সম্পাদক সৈয়দ মাহফুজ খন্দকার, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যপরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডক্টরস সোসাইটির আহ্বায়ক ডাঃ আবদুল্লাহ খান, শায়খুল হাদীস মাওলানা লোকমান মাযহারী, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী, অধ্যাপক ড. তারেক ফজল, শামীম সাঈদী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট বোরহান উদ্দিন, এডভোকেট আকবর হোসেন প্রমুখ।

আরো উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শফিঊল আলম, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অর্থ ও আইন বিষয়ক সম্পাদক- এডভোকেট মো: মিজানুর রহমান, মাওলানা নোমান মাযহারী, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, হাফেজ মাওলানা জিন্নত আলী, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা সৈয়দ মুশাহিদ আলী, মাওলানা সাঈদ আহমদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইলিয়াস আহমদ, শ্রমিক মজলিস সভাপতি নূর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল কালাম, সলিমুল্লাহ মুসলিম একাডেমীর সভাপতি আবদুল জব্বার প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ মজিবর রহমান বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে সোজা আঙ্গলে ঘি উঠবে না। সহজে এই জনবিচ্ছিন্ন সরকারকে হঠানো যাবে না। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জালিম সরকারের হাত থেকে দেশবাসীকে মুক্ত করতে হবে।

মূল বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, আজকে মানুষ অহেতুক জুলুম নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এই রোজার মধ্যেও মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। ক্রসফায়রের শিকার হচ্ছে। অনেক সাধারণ মানুষ রমজান মাসে জেল জুলুমের শিকার হচ্ছে। জাতীয় ঐক্যে মাধ্যমে স্বৈরাচারি নব্য বাকশালী শাসনের অবসান ঘটাতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ শফিক ্উদ্দন বলেন, জনগণের জবিনের নিরাপত্তা আজ নেই। জুলুম নির্যাতনের হাত থেকে বিশ্ব মানবতার মুক্তি কামনা করছি। মজলুম মানবতার মুক্তির জনে ইসলামের ছাযা তলে আমাদদের সমবেতে হবে হবে। সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েমে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

আলোচনার শুরুতে মির্জ্য ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ এমন সময় ইফতার করছি যখন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নির্জন কারাগারে বাস করছেন। এই জুলুমবাজ, বেআইনি, অবৈধ সরকার সম্পূর্ণ গায়ের জোরে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে আছে এবং তাকে স্থায়ী করার জন্য খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় আটকে রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া সবসময় গণতন্ত্রের সংকটে সামনে এসে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন। কখনো তিনি নির্বাচনে পরাজিত হননি। সে জনপ্রিয় নেত্রীকে এই গণবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণ থেকে দূরে রাখতে কারাগারে রেখেছে। আজ আমাদের মন ভারাক্রান্ত।’

তিনি বলেন, ‘এই দানবকে সরাতে হবে। তার জন্য দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আমাদেরকে। আল্লাহ আমাদেরকে মুক্তি দিক এই ভয়াবহ দানব ও নির্যাতনকারী থেকে।’

ইফতারের পূর্বে মাহফিলে দেশ, জাতির কল্যাণ কামনায় ও মজলুম মানুষের মুক্তি কামনায় মাহফিলে দোয়া-মুনাজাত পরিচালনা করেন খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল বাসিত আজাদ(বড় হুজুর)।